পরনে নেই এক টুকরো কাপড়, ‘জবার নগ্ন ভিডিও’ ভাইরাল! তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

পরনে নেই এক টুকরো কাপড়, ‘জবার নগ্ন ভিডিও’ ভাইরাল! তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

পরনে নেই এক টুকরো কাপড়, ‘জবার নগ্ন ভিডিও’ ভাইরাল! তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

জবার ভাইরাল ভিডিও কেলেঙ্কারি

বাংলা টেলিভিশনের এক অন্যতম জনপ্রিয় মুখ ‘জবা’। বহু বছর ধরে একটি ধারাবাহিক নাটকে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। কিন্তু হঠাৎ করে এমন এক ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যা গোটা সোশ্যাল মিডিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ভিডিওটি দেখে অনেকেই দাবি করছেন, এতে যে নগ্ন নারীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি নাকি জবার ভূমিকায় পরিচিত সেই অভিনেত্রী!

ভিডিওর সূত্রপাত: কোথা থেকে এল এই কনটেন্ট?

ভিডিওটি প্রথম প্রকাশ পায় একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে। এরপর WhatsApp, Facebook ও X (সাবেক Twitter)-এ মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ লিখেছে, “এই কি জবার আসল রূপ?” আবার কেউ বলছে, “এই ভিডিও জেনারেটেড বা Deepfake হতে পারে।” কিন্তু সত্যটা কী?

ভিডিও দেখে কী বোঝা যায়?

১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ঘরের মধ্যে এক নারী পরনে এক টুকরো কাপড়ও নেই। ক্যামেরার দিকে ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে তাকানো সেই নারীর মুখ অনেকটা জবার মতোই দেখতে। মুখ, কণ্ঠস্বর, এমনকি কিছু অভিব্যক্তিও মিলছে জবার সঙ্গে। তবে ভিডিওর গুণমান খুব বেশি ভালো নয়, যার ফলে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হওয়া কঠিন।

Deepfake না বাস্তব?

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিডিওটি হতে পারে Deepfake প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি, যেখানে অন্য একজনের দেহে জবার মুখ বসানো হয়েছে। বর্তমান AI ও ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এতটাই উন্নত হয়েছে যে অনেক ক্ষেত্রেই সত্য-মিথ্যা আলাদা করা যায় না।

কলকাতার এক সাইবার বিশেষজ্ঞ জানান – “ভিডিওর ফ্রেম-বাই-ফ্রেম বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় কিছু অংশে মুখের অঙ্গভঙ্গি ও দেহের গতি ঠিক মেলে না। এটি Deepfake হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।” তবু নেটিজেনদের একাংশ এখনো বিশ্বাস করছে ভিডিওটি আসল।

জবার প্রতিক্রিয়া কী?

এখনো পর্যন্ত ওই অভিনেত্রীর পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো বিবৃতি আসেনি। তবে ধারাবাহিকটির নির্মাতা সংস্থা এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং চরিত্র হানির জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বানানো হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।” সূত্র বলছে, জবা ও তার পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া

সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছে – “একটা জনপ্রিয় নারী চরিত্রকে নিশানা করা হচ্ছে।” কেউ আবার বিশ্বাস করছে, “তারকা হলেও উনিও মানুষ – তারও গোপন জীবন থাকতে পারে।” অন্যদিকে, অনেকেই বলছেন ভিডিওটা আসল হলেও সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়, যেটা অনলাইনে ছড়ানো অনৈতিক।

আইনি দৃষ্টিকোণ

ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ই ধারা অনুযায়ী, ব্যক্তিগত ভিডিও বা গোপনীয় ছবি ছড়ালে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। একই সঙ্গে ভিডিওটি Deepfake প্রমাণিত হলে, যারা এটি ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

এই ঘটনায় আমরা কী শিখলাম?

এ ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কতটা সহজে এখন কাউকে ডিজিটালি হেনস্থা করা যায়। AI, Deepfake এবং ডিজিটাল ম্যানিপুলেশনের যুগে সত্য-মিথ্যার সীমানা অনেকটাই ঝাপসা। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা কিছু দেখি, সবটা বিশ্বাস না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

শেষ কথা

একজন অভিনেত্রীকে তার অনস্ক্রিন ইমেজ দিয়ে বিচার না করে, আমরা যেন তার ব্যক্তিগত মর্যাদা ও সম্মানকে রক্ষা করি। এই ভিডিও আসল হোক বা নকল, একজন নারীর চরিত্র হননের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অন্যায়। আমাদের উচিত আরও সচেতন হওয়া এবং এই ডিজিটাল যুগে গুজব ও কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।

লেখক: প্রোটিদিন বাংলা টিম | প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৫

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন